আমার আপন আঁধার
আমার আপন আঁধার Original price was: 200.00৳ .Current price is: 60.00৳ .
Back to products
জনম জনম
জনম জনম Original price was: 200.00৳ .Current price is: 60.00৳ .

সেরিনা

120.00৳ 

পৃষ্ঠাঃ ১২৪
প্রকাশকালঃ ৯ম মুদ্রণ, ২০১৯
কন্ডিশনঃ ভাল
বইয়ের ধরণ: কল্পবিজ্ঞান
প্রকাশনী: সময় প্রকাশন
Purchase this product now and earn 120 Points!
Description

“বইয়ের ভিতর থেকে”

ভূমিকা

তখন মাত্র দেশ স্বাধীন হয়েছে, দেশে সবকিছুর খুব অভাব, কোনো কিছু পাওয়া যায় না। হঠাৎ আবিষ্কার করলাম দেশটি রাশিয়ান বই দিয়ে ভরে গেছে। কী সুন্দর বই, বিশ্ব সাহিত্যের যে অসাধারণ বই কখনো পড়ার কথা কল্পনাও করিনি সেই বই আমাদের হাতের নাগালে।

আমি তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। হঠাৎ করে একটা বই হাতে এল, বইয়ের নাম, গ্রহান্তরের আগন্তক। বইটি সায়েন্স ফিকশন, কিছু গল্পের সংকলন, পড়ে আমি হতবাক হয়ে গেলাম। সেই বইটি আমাকে এতই মুগ্ধ করল যে তার একটি গল্প ম্যাক্সওয়েলের সমীকরণকে নাট্যরূপ দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টি.এস.সি.-তে নাটক হিসেবে মঞ্চস্থ করেছিলাম। যারা সেই নাটকে অভিনয় করেছিল, যারা কলাকুশলী ছিল তাদের প্রায় সবাই এখন খুব বড় বড় মানুষ হয়ে পৃথিবীর নানা দেশে ছড়িয়ে আছে!

গ্রহান্তরের আগন্তক বইটিতে আরেকজন অসাধারণ লেখকের একটি গল্প ছিল, তার নাম আলেক্সান্ডার বেলায়েভ। (সেই গল্পের মূল চরিত্র ছিল একটি হাতী, তাই সেটাকে নাটকে মঞ্চস্থ করার কথা মাথায় আসেনি!) আলেক্সান্ডার বেলায়েভের লেখা উভচর মানব আমার পড়া প্রথম পূর্ণাঙ্গ সায়েন্স ফিকশন উপন্যাস। সেই উপন্যাসটি যেভাবে আমার মনে দাগ কেটেছিল সেরকম আর কোনো উপন্যাস কাটেনি। (আমি তখন জানতাম না এই অসাধারণ লেখক মারা গিয়েছিলেন না খেতে পেয়ে, নাৎসী জার্মানীর দখল করা একটি অবরুদ্ধ শহরে। তার দেহ সমাহিত হয়েছিল নাম চিহ্ন হীন একটি গণকবরে।

বহুদিন পর সেরিনা লিখতে গিয়ে আমার বার বার আলেক্সান্ডার বেলায়েভের কথা পনে পড়ছে। এরকম একটি সায়েন্স ফিকশন যে লেখা যেতে পারে সেটি আমি তার কাছেই শিখেছি।

মুহম্মদ জাফর ইকবাল
১.২.২০১৫

.

পূর্ব কথা

ছোট স্টেশনটা ছবির মতো সুন্দর। প্লটফর্মের উপর ছোট একটা লাল ঘর, তার পিছনে ঘন সবুজ গাছের সারি। ওপরে গাঢ় নীল আকাশ সেই আকাশে সাদা শরতের মেঘ। স্টেশনের পাশ দিয়ে একটা মাটির সড়ক গ্রামের দিকে চলে গেছে। সড়কের দুই পাশে কৃষ্ণচূড়া গাছ, সেই গাছের নরম ছায়ায় একটা কিশোরী লাল একটা ফুল হাতে নিয়ে ট্রেনটির দিকে তাকিয়ে আছে। ট্রেনের জানালা দিয়ে, এই অপূর্ব দৃশ্যটির দিকে তাকিয়ে থেকে শামীম নিজের মনে বলল, “বাহ! কী সুন্দর।”

ট্রেনের অন্য কোনো যাত্রীর এই দৃশ্যটি চোখে পড়েছে বলে মনে হল, কারণ এই মাত্র সবাই খবর পেয়েছে সামনে একটা মালগাড়ী লাইন থেকে ছিটকে পড়েছে এবং যতক্ষণ পর্যন্ত সেগুলোকে টেনে সরানোনা হচ্ছে। ততক্ষণ সবাইকে এখানে বসে থাকতে হবে। সময়টা এক দুই ঘন্টা হতে পারে সাত আট ঘন্টাও হতে পারে। সে কারণে যাত্রীদের ভেতর বিরক্তি, হতাশা, আতংক এবং ক্ষোভের জমা হয়েছে। কোনো একটা বিচিত্র কারণে শামীমকে তার কিছুই স্পর্শ করল না, সে হালকা মেজাজে উঠে দাঁড়িয়ে মাথার ওপরে রাখা তার ব্যাকপেকটা টেনে নামাতে থাকে।

তার পাশে বসে থাকা মানুষটি অবাক হয়ে শামীমের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করল, “কী করেন?”

শামীম বলল, “নেমে যাই।”

মানুষটি চোখ কপালে তুলে বলল, “নেমে যান?”

“হ্যাঁ। গ্রামটা একটু ঘুরে আসি।”

“যদি এর মাঝে রেল লাইন ঠিক হয়ে যায়? ট্রেন ছেড়ে দেয়?”

“দিলে দিবে। পরের ট্রেনে আসব।”

“এই ছোট স্টেশনে ট্রেন যদি না থামে?”

“লোকাল ট্রেনে চলে আসব। বাস টেম্পু কিছু একটা ব্যবস্থা হয়ে যাবে।”

মানুষটার কাছে তবু ব্যাপারটা গ্রহণযোগ্য মনে হল না। পাশাপাশি বসে এতোক্ষণ শামীমের সাথে কথা বলে এসেছে, শামীম পাস করা ডাক্তার, ডাক্তারী না করে বিদেশে ল্যাবরেটরিতে গবেষণা করে দেশে চলে এসেছে, পরিবারের কেউ দেশে থাকে না এ-রকম একটা মানুষ হঠাৎ ট্রেন থেকে একটা ছোট গ্রাম্য স্টেশনে কোনো কারণ ছাড়াই নেমে পড়বে সেটা তার পক্ষে বিশ্বাস করা কঠিন। এর ভেতরে কোনো একটা জিনিস নিশ্চয়ই ভুল হচ্ছে কিন্তু কোন জিনিসটা ভুল সে ঠিক বুঝতে পারছিল না!

শামীম মানুষটার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে ট্রেন থেকে নেমে পড়ল। প্রাটফর্মের এক কোনায় টিউবওয়েল চেপে তার শ্যাওলা গন্ধের ঠাণ্ডা পানিতে মুখ ধুয়ে এক ধরনের আরামের শব্দ করে ব্যাকপেকটা ঘাড়ে নিয়ে সড়কটার দিকে এগিয়ে যায়।……

 

Reviews (0)

Reviews

There are no reviews yet.

Be the first to review “সেরিনা”

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Shipping & Delivery